১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
সর্বশেষ

রংপুরের খালবিলে পানি শুন্যতায় বিপাকে পাটচাষি

জালাল উদ্দিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর মিডিয়াঃ

 

রংপুরে গত কয়েকদিনে তীব্র তাপদাহে নদ-নদীর খাল বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন স্থানীয় পাট চাষিরা। গত বছরে পাটের অধিক দাম থাকায় এ বছর রংপুরে পাটের চাষ হয়েছে ব্যাপক । কিন্তু পানির অভাবে উপযুক্ত সময়ে পাট কাটতে না পারায় খেতেই পাট শুকিযয়ে যাওয়াতে ফলন হ্রাসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় পাট চাষিরা।

বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টির পানির অভাবে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের পাট চাষিরা। খালবিল নদ নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছে না কৃষক। একদিকে যেমন মাঠের পাট কাটতে পারছে না, অন্যদিকে পাট না কাটার ফলে সেসব জমি খালি করে আমন ধানের জমি তৈরি করতে পারছেন না তারা। এতে সময় মত পাট জাগ দিতে না পারলে পাটের ন্যায্যমূল্য এবং সময়মত ধান রোপন করতে না পারলেও ধানের উৎপাদন কমে যাওয়াসহ কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষকরা।

রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের দোলা পাড়া গ্রামের কৃষক সাদেক মিয়া (৫০)প্রতিবেদককে বলেন,পানির অভাবে পাট পঁচাতে না পেরে জটিল সমস্যায় পড়েছি। অনেক কৃষক দিনমজুর বা পরিবহনের মাধ্যমে দূরে নদীতে নিয়ে গিয়ে পাট পঁচাচ্ছেন। আশপাশের খাল-বিলে পানি নেই। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। অর্ধেক জমির পাট কেটে ফেলে রেখেছি।’পাটের ভালো ফলন হলেও পানির অভাবে জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।

সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের ধাপের হাট এলাকার কৃষক দুলাল মিয়া (৪০) প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের এলাকায় পাট চাষ খুব ভালো হয়ে। এবছরেও পাট চাষ সুন্দর হয়েছে। যদিও পাট চাষ করতে নানান জটিলতায় পড়তে হয়, তারপরেও পাট চাষে ব্যাপক মুনাফা আসে। তবে এবছর সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ডোবাগুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে পাট পঁচাতে না পেরে ন্যায্যমূল্য পাওয়া খুব কষ্টদায়ক হতে পারে। ৩নং চন্দনপাট ইউনিয়নের চন্দনপাট গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রাসেল মিয়া (৪৫) বলেন, মাঠের পাট কেটে একটি ডোবায় জাগ দিয়েছিলাম, তখন পানি ছিল এক হাটু। ভাবছিলাম বৃষ্টি হয়ে পানি বেশি হবে।

কিন্তু বৃষ্টি না আসায় তার পাটের জাগ শুকনায় পড়ছে।তাছাড়াও আমার আরো ২বিঘা জমির ক্ষেতের পাট মরে যাচ্ছে, কিন্তু পানির অভাবে পাট কাটতে পারছিনা,বৃষ্টি না হলে ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই মরে যাবে। খাল বিল নদ-নদীতে পানি ভরাট করনীয় বিষয়ে ৩নং চন্দনপাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেছেন আমাদের ইউনিয়নে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাট চাষ হয়। তবে এবছর বৃষ্টির পানির অভাবে লোকসান গুনতে হতে পারে কৃষকদের। তবে আমরা এসব খালবিলে কি ভাবে পানির ব্যবস্থা করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি এবং দ্রুত পানির ব্যাবস্থা করবো।

অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকরা পাট পঁচাতে না পারলে কিভাবে পাট পচানো যাবে সে বিষয়ে রংপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, খাল বিলে পানি না থাকলে পাটের ছাল ছিঁড়ে প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে স্বল্প পানি দিয়ে পাট পচানো যায়। আমরা (রিবন রোটিং) পদ্ধতিতে পাট পঁচানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়াও উন্নতজাতের পাট চাষেও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn