১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
সর্বশেষ

রংপুরে গৃহবধূ হত্যায় একজনের আমৃত্যু কারাদন্ড

জালাল উদ্দিন/টোয়েন্টিফোর মিডিয়া ডটকমঃ

 

রংপুরের মিঠাপুকুরে গৃহবধু রেহেনা বেগম মাথায় পাথর দিয়ে কয়েক দফা আঘাত করে নৃশংস ভাবে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা আসামী লাভলু মিয়াকে আমৃত্যু কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের বিশেষ জজ রেজাউল করিম এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী লাভলু মিয়া কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে রায় শুনেছে। পরেই তাকে কড়া পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলার বিবরনে জানাগেছে, ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই তারিখে রাত ৮ টা থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শংকরপুর উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আসামী লাভলু মিয়া মামলার বাদী পার্শ্ববর্তী শংকরপুর মধ্যপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের মা রেহেনা বেগমের ঘরের জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে চুরি করার উদ্দেশ্যে কিন্তু ঘরের ড্রয়ার খুলে কিন্তু সেখানে মাত্র ১শ টাকা পায়। এরপর আসামী লাভলু মিয়া রেহেনা বেগমের কানে পড়ে থাকা দুটি সোনার কানের দুল জোর করে ছিনিয়া নেবার চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে কান থেকে দুটি দুল ছিনিয়ে নেয়। এ সময় রেহেনা বেগম আসামী লাভলুকে চিনতে পেরে তার নাম ধরে বলার সাথে সাথে আসামী তার সাথে থাকা বড় পাথর দিয়ে রেহেনা বেগমের মাথায় উপযুপরি আঘাত করে হত্যা করে। এরপর তার মৃত দেহ টেনে হেচড়ে বাড়ির অদুরে একট্ি বাঁশ ঝাড়ে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় নিহত রেহেনা বেগমের ছেলে খোরশেদ আলম বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনায় পুলিশ আসামী লাভলু মিয়াকে গ্রেফতার করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবান বন্দি প্রদান করে। পরে পুলিশ আসামী লাভলু মিয়ার নামে আদালতে চাজর্সীট দাখিল করে। আদালত ২০১৬ সালের ১৫ জুন তারিখে মামলায় আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

এরপর ২১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষে বিচারক আসামী লাভলু মিয়াকে দন্ড বিধি আইনের ৩০২ ধারায় দোষি সাব্যস্ত করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। অপরদিকে দন্ড বিধি আইনের ৩৮০ ধারায় দোষি সাব্যস্ত করে ৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাদন্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী আদালতের কাঠগড়ায় নীরবে দাঁড়িয়ে ছিলো।

সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা কারী আইনজিবী বিশেষ পিপি জয়নাল আবেদীন অরেঞ্জ এ্যাডভোকেট জানান, বাদী পক্ষ ন্যায্য বিচার পেয়েছে এ রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজিবী সুলতান আহাম্মেদ শাহিন এ্যাডভোকেট জানান তারা ন্যায্য বিচার পাননি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন।

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn