জালাল উদ্দিন/টোয়েন্টিফোর মিডিয়া ডটকমঃ
রংপুর মহানগরীর ঘাঘট নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ‘দ্বীপ’ এলাকা বলে পরিচিত পানবাড়ি এলাকার ব্রীজটি। একই সঙ্গে ওই সড়কে প্রতিনিয়ত বালু বোঝাই ট্রাক চলাচল করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সড়ক। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালু তুলে বিক্রি করতে নিষেধ করায় মামলাও দিয়েছেন আলম নামে এক ব্যক্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রংপুর মহানগীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পানবাড়ি গ্রামে ঘাঘট নদী থেকে দীর্ঘদিন থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন একদল ব্যবসায়ী। এতে করে ওই ব্রীজটি হুমকিতে পড়েছেন। এমনকি নদী থেকে দীর্ঘদন বালু উত্তোলন করায় নদীর কিনারায় থাকা বাড়িও হুমকিতে পড়েছেন। সড়কে চলাচল করতে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এখানে যারা মাতা ( প্রধান) মহৎ আছে তারা এখানে এসে ব্যবসা করতেছে।
আমাদের বাসার সঙ্গে নদী, ওরা নদী থেকে বালু তুলতেছে। ওদের বললে বলে আমরা আমাদের নিজস্ব জমি থেকে বালু তুলতেছি তাতে আপনাদের কী? তোমরা বাঁধা দিতে পারবা না। ওদের টাকা পয়সা আছে ওদের জোর আছে, আমরা গরীব মানুষ, ওদের সঙ্গে প্রতিবাদ করতে পারবো না। আমরা অনেক চিল্লাচিল্লি করি, বাঁধা দেই কিছু হয়না। পরে আমরা কছি, ভাই আপনারা ব্যবসা করেন আমাদের যেন ক্ষতি না হয়। আমাদের বাড়ি ঘর ভাঙ্গলে যা ব্যবস্থা নেওয়া লাগে আমরা নেবো।
আরেক বাসিন্দা জানান, ব্রীজের পাশের পয়েন্টে ম্যাজিষ্ট্রেট পাঁচ সাতবার আচ্ছিল, পুলিশের তো হিসেব নাই। রাস্তার জন্য অভিযোগ যায়, পুলিশ আসে, পুলিশ আসি বলে সরকারি রাস্তা দিয়ে বালু যায় তাতে আপনাদের কী? এই মাটি বালু তো সরকারি কাজে যায়, সরকারি রাস্তায় যায় আপনারা বাঁধা দিবেন কেন? ধুলে দিয়ে বাড়ি ঘর অন্ধকার হয়া যায়। তিনি বলেন, আমার স্বামী রিক্সা চালায়, রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় রিক্সা নিয়ে বাড়িত আসতে পারে না। আরাজি ধর্মদাস এলাকার এক অটোচালক বলেন, বালু উবাইতে উবাইতে রাস্তা ভাঙ্গি ফেলাইছে। চুরমাচার হইছে।
যাওয়াই তো যায় না। কত এক্সিডেন্ট হওছে। এ্যালাই চারজন লোক অসুস্থ্য হয়ো হাত ভাঙ্গি পড়ি আছে। পানবাড়ি পূর্বপাড়ার বাসিন্দা হামিদুর রহমান বলেন, যখন পুল পার হয় তখন গাড়ি গড্ডি গড্ডি পড়ি যায়। একে দোলা বাড়িত। কারো হাত ভাঙ্গে কারো পাও ভাঙ্গে। দারগা ওসিক বলতেছি, কাউন্সিলরক বলতেছি তারা গুরুত্ব দেয় না। তখন আমি বলছি, টাকা ভাগ খান নাকি, এই অবস্থা। আনছারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, বালু তোলা বন্ধে আমরা মানববন্ধন করেছি, বিক্ষোভ করেছি, বাঁধা দিয়েছি এজন্য আমাকে এক নম্বর আসামী করে একটি চাঁদাবাজি মামলা দেয়া হয়েছিল। আমরা সবাই জামিন নিয়েছি।
মামলার বাদী আলম জানান, আমি যখন বালু তুলছিলাম সেগুলো সরকারি জায়গায় দেয়া হছিল। বালু তোলার কারণে চাাঁদা বাদী করায় মামলা করা হয়েছে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছামছুল হক বলেন, শুনেছি বালু উত্তোলন করাহয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, মেট্রোপলিটন এড়িয়ায় সরকারিভাবে কোন বালু মহল নেই। যদি অবৈধভাবে কেউ বালু উত্তোলন করে থাকে তাহলে সেটার ব্যবস্থা নিবে মেট্রোপলিটন পুলিশ।
তারা আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা সহযোগিতা করবো। এ নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ( মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ বিষয়ে যদি আমাদের কাছে লিখিত কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।