২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি
সর্বশেষ

রংপুরে বিএডিসি’র গভীর নলকুপ অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ

জালাল উদ্দিন/টোয়েন্টিফোর মিডিয়া ডটকমঃ

 

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএডিসি’র) গভীর নলকুপ অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় গভীর নলকুপের ম্যানেজার মো.মতিয়ার রহমান দখল উচ্ছেদ চেয়ে আদালতসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাল্টাপাল্টি দখলের কারণে দুঃশ্চিত পড়েছেন ওই এলাকার আলু চাষিসহ বোরো চাষিরা। তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রংপুর সদর উপজেলার ঈশ্বরপুর (শালমারা) এলাকার মৃত. আব্দুল গণি’র ছেলে মতিয়ার রহমান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে নিজ এলাকায় নিজ নামীয় গভীর নলকুপ স্থাপনের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছেন। এছাড়াও তিনি নিজ জমি চাষাবাদের পাশাপাশি প্রতিবেশির জমিতে পানি সেচ প্রদান করছেন।

কিন্তু হঠাৎ করে গভীর নলকুপের ম্যানেজার মতিয়ার রহমানের প্রতিপক্ষ পশ্চিম রাজেন্দ্রপুর শালমারা এলাকার জালাল উদ্দিন স্থাপিত গভীর নলকুপের জায়গা নিজের দাবি করে জোরপূর্বক দখল করে কৃষকের মাঝে সেচ প্রদান করে আসছেন। এতে করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে চলতি বছরের ৩১জানুয়ারি গভীর নলকুপের ম্যানেজার মতিয়ার রহমানের আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের স্মারক নং-০৫.৫৫.৮৫০০.০০৬.১৩.২১৫.২১.৯৪(২) এবং ২৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রংপুর সদর ও বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (নির্মাণ) এবং রংপুর জেলা সেচ কমিটির নিকট প্রেরণ করা হয়। উল্লেখিত দপ্তরের কর্মকর্তাগণ আনীত অভিযোগটি তদন্ত করে পুনঃরায় পূর্বের ম্যানেজার মতিয়ার রহমানের নিকট গভীর নলকুপের রক্ষনাবেক্ষণসহ যাবতীয় দায়িত্ব প্রদান করেন।

এছাড়াও ২কার্যদিবসের মধ্যে গভীর নলকুপের চাবি, কার্ট আউট বুঝে নিয়ে বিএডিসি’র নলকুপটি চালু করা জন্য আদেশ দেন। আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নলকুপের ম্যানেজার মতিয়ার রহমান গভীর নলকুপটি চালু করলে প্রতিপক্ষ জালাল মিয়া ও তার লোকজন পেশি শক্তি দেখিয়ে ও তার বাহিনী দিয়ে গভীর নলকুপের জায়গা নিজের দাবি করে সেচ প্রদান কাজ বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী মতিয়ার রহমান বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সুনামের সাথে গভীর নলকুপটি পরিচালনা করে আসছি। কিন্ত হঠাৎ করে প্রতিবেশি জালাল তার গুন্ডাবাহিনী গভীর নলকুপটি নিজের দাবি করলে তাৎক্ষনিকভাবে বিএডিসি, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক, বিএডিসি কর্তৃকপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

তদন্ত কমিটি পুনঃরায় আমাকে ম্যানেজারের দায়িত্ব দেন। মতিয়ার রহমান আরও বলেন, বিএডিসি থেকে স্থাপিত গভীর নলকুপটি ক্রয়কৃত আমার নিজ নামীয় জমিতে থাকলে তারা জোরপূর্বক দখল রেখেছেন। আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অভিযুক্ত জালাল মিয়া বলেন,গভীর নলকুপটি আমার বাবা চালিয়ে ছিলেন। সেই সময় মতিয়ার রহমান ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন। তদন্ত কমিটি টাকা খেয়ে একতরফা রায় দিয়েছেন। বিদ্যুতের সংযোগের বিষয়ে জালাল মিয়া বলেন, সংযোগটি বিএডিসির নামে। বিএডিসি মতিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন। এছাড়া পুলিশ গত কয়েকদিন আগে একটি নোটিশ দিয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল রাজ্জাক বলেন, আমার জানা মতে দীর্ঘ থেকে মতিয়ার রহমান বিএডিসি’র গভীর নলকুপটি পরিচালনা করে আসছিলেন। তবে বর্তমান বিষয়টি জানা নেই।

রংপুর মেট্রোপলিটন হাজিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসুনিয়া জানান, আমি ছুটিতে রয়েছি। তবে ঘটনাটি তদন্তের জন্য থানা থেকে একজন সাব ইন্সপেক্টরকে পাঠানো হয়েছিল। তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) রংপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, গভীর নলকুপটির দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা ছিলো। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের মাধ্যমে গভীর নলকুপের দায়িত্বটি পূর্বের ম্যানেজার মতিয়ার রহমানকে দেয়া হয়েছে।

Facebook
Twitter
Pinterest
Reddit
Skype
Email
LinkedIn